, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

সমঝোতার কথা ভাবছে বিএনপি ও মিত্ররা।

প্রকাশ: ২০২৩-১১-১৮ ১২:১৬:৫২ || আপডেট: ২০২৩-১১-১৮ ১২:১৬:৫৬

Spread the love

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক সমঝোতা ছাড়াই আওয়ামী লীগ সরকার ‘একতরফা’ নির্বাচনের পথে হাঁটছে বলে মনে করছে বিএনপি ও তাদের মিত্ররা। তাদের দাবি, একতরফা নির্বাচন চলমান রাজনৈতিক সংকটের সমাধান নয়, বরং সংকটকে আরও ঘনীভূত করবে। একই সঙ্গে তপশিল ঘোষণা হলেই যে নির্বাচন হয়ে যাবে, সেটিও মনে করছে না বিএনপি ও তাদের শরিকরা। নেতারা বলছেন, এ দেশে পুনঃতপশিল হওয়ার একাধিক উদাহরণ রয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রাজপথে আন্দোলন আরও জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। সংকট সমাধান না হওয়া পর্যন্ত একদফার আন্দোলন চালিয়ে যাবে দলটি। নেতাদের দাবি, চলমান আন্দোলন এবং নির্বাচন ইস্যুতে সরকারের ওপর পশ্চিমা বিশ্বের অব্যাহত চাপে শিগগির অবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তন হতে পারে।

বিএনপি ও শরিকদের দাবি, তপশিল ঘোষণা হলেও দেশে নির্বাচনী আমেজ নেই বরং জনমনে এক ধরনের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। তপশিলকে স্বাগত জানিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আনন্দ মিছিল করলেও গণতন্ত্রকামী দলগুলোর পাশাপাশি দেশের জনগণ ‘একতরফা’ তপশিল প্রত্যাখ্যান করেছে। তা ছাড়া বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা কারাগারে। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় তালাবদ্ধ, নেতাকর্মীরা সেখানে যেতে পারেন না। মিথ্যা মামলায় এরই মধ্যে অনেককে সাজা দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক আরও অনেক মামলা রায়ের পথে। সবকিছুই হচ্ছে একতরফাভাবে। সরকারের এসব কার্যক্রমে প্রতীয়মান হচ্ছে, বিএনপি ও বিরোধী দলগুলোকে বাইরে রেখে তারা ফের একতরফা নির্বাচনের পথেই হাঁটছে।

তপশিল ঘোষণা করা হয়। সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য এ তপশিল চার বার পরিবর্তন করা হয়। অবশেষে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর বহু প্রত্যাশিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে বাংলাদেশে নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে গণতান্ত্রিক বিশ্বের চাওয়াকে আমলে না নিয়ে সরকার একতরফা নির্বাচনের পথেই হাঁটছে বলে মনে করছে সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনে বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ মিত্র গণতন্ত্র মঞ্চ। এ প্রসঙ্গে এই জোটের অন্যতম নেতা ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক দৈনিক কালবেলাকে বলেন, গত কয় বছর ধরে এই সরকারের একটা পাবলিক অঙ্গীকার ছিল, আগামী নির্বাচনটা ২০১৪ কিংবা ‘১৮ এর মতো হবে না। তারা এবার সুষ্ঠু, অবাধ, অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করবেন; কিন্তু সে ব্যাপারে সরকারের দিক থেকে আজ পর্যন্ত কোনো সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা নেই। সরকার যদি নির্বাচনকালীন সংকট উত্তোরণে আন্তরিক হন, তাহলে একটা নীতিগত সিদ্ধান্ত ও প্রস্তাবনা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। প্রথমত, ঘোষিত তপশিল স্থগিত করতে হবে। তারপর বিরোধী দলের নেতাদের মুক্তির ব্যবস্থা করতে হবে, বিরোধী দলের স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। এই উদ্যোগটি সরকারের পক্ষ থেকেই আসতে হবে। এ রকম একটা পরিবেশ তৈরি হলে তখন বিএনপি, গণতন্ত্র মঞ্চসহ বিরোধী দলগুলো নিশ্চয়ই বসবে; কিন্তু বর্তমান অবরুদ্ধ পরিস্থিতিতে সংলাপের কোনো পরিবেশ নেই।

তিনি আরও বলেন, গণতান্ত্রিক বিশ্ব বলে পরিচিত বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদার দেশগুলো বাংলাদেশে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায় বলে বিভিন্ন সময় জানিয়েছে; কিন্তু তাদের পরামর্শ, চাওয়াকে আমলে না নিয়ে সরকার বেপরোয়াভাবে একতরফা নির্বাচনের পথে হাঁটছে। ফলে সুষ্ঠু নির্বাচন ইস্যুতে সরকারের ওপর এ দেশগুলোর চাপ সামনে আরও বাড়তে পারে, এমন আশঙ্কাই বেশি। আমরা জনগণের নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবির প্রতি নির্ভর করে চলমান গণআন্দোলনকে তীব্রতর করব।

সুত্রঃ দৈনিক কালবেলা।

Logo-orginal