admin
প্রকাশ: ২০২০-০৭-২৯ ২১:৪৭:৩৬ || আপডেট: ২০২০-০৭-২৯ ২২:১০:৪৯
ইসমাঈল হোসেন নয়ন,রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধিঃ
মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে জমে উঠতে শুরু করেছে রাঙ্গুনিয়ার পশুর হাট গুলো। তবে এসব হাটে বেশির ভাগ ক্রেতা-বিক্রেতা স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। তাঁদের মুখে মাস্ক নেই। সামাজিক দূরত্বও উধাও। যেন করোনার সংক্রমণের কথা ভুলেই গেছেন সবাই।
এ বছর রাঙ্গুনিয়ায় সরকারিভাবে পাঁচটি গরুর হাটের নিলাম হয়েছে। এছাড়া পৌরসভার পক্ষ থেকে আরো দুইটি পশুর বাজারের নিলাম হয়। সব মিলিয়ে সাতটি পশুর হাট বসেছে রাঙ্গুনিয়ায়। তবে বিক্ষিপ্ত ভাবে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ীভাবে অনেকগুলো পশুর হাট বসেছে। এ রকম একটি হাটে শতাধিক গরু আনা হয়েছে বিক্রির জন্য। এসব গরুর চারপাশে কয়েক শ ক্রেতা-বিক্রেতার জটলা। অনেকের মুখেই মাস্ক নেই। কেউই সামাজিক দূরত্ব মানছেন না। ক্রেতাদের সঙ্গে বেশ কিছুসংখ্যক শিশুরও দেখা মেলে। এ চিত্র গতকাল মঙ্গলবার উপজেলার মোগলেরহাট এলাকার কোরবানির পশুর হাটের। এভাবে অবাধে ঘুরে বেড়ানোর কারণে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গতকাল রাণীরহাট গরু কিনতে আসা উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, উপজেলার সবচেয়ে বড় পশুর হাট এটি। সপ্তাহে মঙ্গলবার হাট বসে। দূরদূরান্ত থেকে মানুষ এই হাটে কেনাবেচা করতে আসেন। তাই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কোনো সুযোগ নেই।
পার্শ্ববর্তী ইসলামপুর এলাকা থেকে গরু বিক্রি করতে এসেছিলেনন আবদুর রহিম হাওলাদার (৪৮)। তাঁর মুখে মাস্ক নেই। এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, পকেটে মাস্ক আছে।
বেতাগী থেকে আসেন মো. ইসমাইল হোসেন (৫০)। তাঁর মুখেও মাস্ক নেই। গরু টানাটানি করা নিয়েই ব্যস্ত। মুখে মাস্ক নেই কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আল্লাহর রহমতে আমাদের কিছুই হবে না।’ পরে পকেট থেকে মাস্ক বের করে মুখে পরেন।
বেশ কয়েকটি বাজারের ইজারাদারেরা বলেন, সবাইকে স্বাস্থ্যবিধির কথা বলা আছে। কিন্তু মানুষ তা মানছে না। আসলে গ্রামের মানুষ সচেতন নয়। তাই স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এদিকে বাজার গুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দেখা গেলেও তাদের স্বাস্থ্যবিধি নিয়ন্ত্রণে তেমন তৎপরতা দেখা যায়নি।
উপজেলার রাজারহাটে আবদুল আউয়াল তাঁর দুটি অল্প বয়সী ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে হাটে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘গরু কেনার জন্য সকালে এখানে এসেছি। একটার দরদাম করছি। দাম ৭০ হাজার টাকা। কিন্তু দামটা কিছুটা বেশিই মনে হচ্ছে।’ ছেলেদের কেন নিয়ে এসেছেন, করোনাকে ভয় পান না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এমনিতেই গরু দেখানোর জন্য নিয়ে এসেছি। পশুর হাট দেখা র জন্য কান্নাকটি করছে তাই তাদের শখ পূরণ করলাম।
এমন হাজারো শখ পূরণ করতে গিয়ে করোনার ঝুঁকিতে পড়ছে লাখো পরিবার। এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা ও করোনা বিষয়ক ফোকাল পারসন ফোরকান উদ্দিন শিকদার বলেন, পরিস্থিতি এখনই খারাপের দিকে। কোরবানের পর সংক্রমণের হার আরও বাড়বে।