, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

ডঃ কামালের নিকট ইসলামপন্হীরা সাম্প্রদায়িক, পাহাড়িরা প্রিয়ভাজন

প্রকাশ: ২০১৮-০৯-০৮ ১২:৫৫:২৬ || আপডেট: ২০১৮-০৯-০৮ ১৩:০৪:৪৭

Spread the love

ডঃ কামালের নিকট ইসলামপন্হীরা সাম্প্রদায়িক, পাহাড়িরা প্রিয়ভাজনআবুল কাশেম, আরটিএমনিউজ২৪ডটকমঃ ডঃ কামালের নিকট ইসলামপন্হীরা সাম্প্রদায়িক, পাহাড়িরা প্রিয়ভাজন। এমন কথা শুনলাম এক বন্ধুর মুখে। প্রবাসের আলাপ-চারিতায় উঠে এসেছে অনেক বিষয়।

তবে গুরুত্ব দিলাম ডঃ কামালের ঐক্যের শর্তকে। প্রখ্যাত আইনজীবী ও সাবেক মন্ত্রী কামাল হোসেনের আন্তর্জাতিক পরিচিতও বেশ সমৃদ্ধ।

তিনি আইন, সংবিধান ও দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বেশ কটি বইয়ের লেখক। তাই তার প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান বজায় রেখে তাকে ও বিএনপির উদ্দেশ্য আমার এই লেখা।

যদিও লেখার মত জ্ঞান ও ধৈর্য্য কোনটার যোগ্যতা আমার নেই। তবে প্রবাসে চাকুরীর সুবাদে সময় মিলতেই হয় পড়ি না হয় লেখি।

ডঃ কামাল,

কামাল হোসেন বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট আইনজীবী, রাজনীতিবিদ এবং মুক্তিযোদ্ধা। সচরাচর তাঁকে “ডঃ কামাল হোসেন” হিসাবে উল্লেখ করা হয়।

তিনি বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতাদের মধ্যে অন্যতম। ১৯৭১-এ তিনি আগরতলা সীমান্ত পার হয়ে ভারতে গেলেও মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণের পরিবর্তে পাকিস্তান গমন করেন এবং সেখানে আইন ব্যবসায় শুরু করেন। কয়েক মাস পর পাকিস্তান সরকার তাঁকে গ্রেপ্তার করে। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর ১৯৭২-এর ৮ই জানুয়ারি শেখ মুজিবের সঙ্গে তাঁকেও মুক্তি দেয়া হয়।

তিনি শেখ মুজিবের সঙ্গে ১০ জানুয়ারি লন্ডন হয়ে বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে তিনি সর্বদাই সোচ্চার। তাঁকে ব্যক্তিগত সততা, ন্যায্যতা, মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের প্রবক্তা হিসাবে সাধারণভাবে সম্মান করা হয়। (সুত্রঃ উইকিপিডিয়া)

আন্তর্জাতিক মহলে তার ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে, সেই সুবাধে পর্দার আড়ালে খেলতে বেশ পারদর্শী মিঃ কামাল হোসেন অভিযোগ আওয়ামী লীগ নেতাদের।

শর্ত দিয়ে ঐক্য হয়না, ঐক্য হয় দেশের স্বার্থে- জনগনের কল্যানে। অথচ জামায়াতসহ সব ইসলামী দলকে ঐক্যের বাইরে রাখতে মরিয়া মিঃ কামাল।

মিঃ কামালের নিকট ইসলামী আদর্শের রাজনৈতিক দলগুলো শত্রু কেন? তার জবাব দেওয়ার জন্য হকপন্হী দলগুলোর ঐক্য সময়ের দাবী।

দূরভাগ্যে বাংলাদেশে যেসব ইসলামী দল বলে দাবী করে, তারা নিজেরাই বাকযুদ্ধে লিপ্ত।

হা, বঙ্গবন্ধুর সেক্যুলারিজম ও বাঙালি জাতীয়তাবাদের আদর্শে বিশ্বাসী ডঃ কামালের আচরণ এমনই হবে।

ঐক্যের নামে যত শর্তঃ

কয়মাস পর স্বাধীনতার চার যুগ পুর্ণ হবে,কিন্তু কি পেয়েছে জাতি? উত্তর না লিখে সত্যটা তুলে ধরা হবে উত্তম। জাতীয় অনৈক্য ও রাজনৈতিক বিভক্তির কারণে পিছিয়ে দেশের নাম হচ্ছে বাংলাদেশ।

অথচ দেশের এই ক্রান্তিকালে আদর্শিক মতাদর্শ ভুলে ঐক্যে ছিল জরুরী। কিন্তু তাতে সাম্প্রদায়িকতার ধোয়া তুললেন মিঃ কামালরা।

বিএনপিকে বার বার ক্ষমতায় বসিয়েছে ডানপন্থীরা, ডঃ কামালরা নয়। মিঃ বদরুদ্দোজাকে প্রেসিডেন্ট হতে সংসদে ভোট দিয়েছিল জামায়াত, মিঃ কামাল-মান্নারা নয়। এই সত্যকে বিএনপি কি অস্বীকার করতে পারবে? অথচ বিএনপিকে শর্ত দিয়ে ঐক্য চায় সেই মুসলিম বিদ্বেষী ডঃ কামালরা।

ঐক্যের জন্য লাফা-লাফির দরকার কি? ৯০ এর স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনেরর মত আলাদা জোট করে আন্দোলন করা যায়। কিন্তু পর্দার অন্তরালের খবর হল, দাবার গুটির চাল নাকি পাশের দেশের।

বিএনপির ভারত ও ডঃ কামাল প্রেমের পরিণতি শুভ হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ।

বিএনপির উচিৎ হবে বেগম জিয়ার মুক্তি ও তত্ত্ববদায়ক সরকার ব্যবস্থা পুর্ণবহাল আন্দোলন জোরদার করা, তাহলে ফিরে আসবে গনতন্ত্র ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা।

তবে কার সাথে ঐক্যে করবে, সেটা একান্ত বিএনপির নিজস্ব ব্যাপার। আমরা যারা মতামত দিতে অভ্যস্ত, শুধু সঠিক ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করি মাত্র।

যেই কারনে জামায়াত কে ছাড়ছে না বিএনপি:

দেশে জোট বদ্ধতার রাজনীতিতে প্রকৃত অর্থে বড় দুই রাজনৈতিক দল কতোটা লাভবান হচ্ছে তা এমনিতেই বোঝা বোঝা যায়; সমীক্ষা করে দেখারও প্রয়োজন নেই। দুই জোটে যে রাজনৈতিক দলগুলো আছে ব্যক্তি সর্বস্ব বলা যায়। আন্দোলন-সংগ্রামে শক্তি বৃদ্ধি করতেই জামায়াতকে জোট থেকে ছাড়ছে না বিএনপি । এছাড়া জামায়াতকে না ছাড়ার আরেকটি কারন হল তাদের ভোট ব্যাংক আছে।

নির্বাচনী মাঠে জামায়াতের ভোট কাজে লাগাতে চায় বিএনপি। যদিও জামায়াতের ওপর যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ রয়েছে, এ নিয়ে দেশে বিদেশে সমালোচনা ও বাধার সম্মুক্ষিন হলেও জামায়াতকে ছাড়ছে না বিএনপি।

জামায়াত নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রবীণ নেতা নজরুল ইসলাম ও গয়েশ্বর রায়ের ২০১৬ সালের কিছু কথা যোগ করে লিখনির শেষ রেখা বসাব।

মিঃ গয়েশ্বর আওয়ামী লীগকে প্রশ্ন করেছিলেন, আইন করে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে পারে। পার্লামেন্টে জামায়াতকে বাতিল করে দিতে পারে। সেটা করে না। জামায়াতকে আমাদের বাদ দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। বাতিল করে দিলেই তো হয়। আর আমরা বাদ দিলে ক্ষমতাসীনরা জামায়াতের সঙ্গে সর্ম্পক করবেন না এই গ্যারান্টি কী ?

তিনি বলেন, অতীত বলে রাজনৈতিক সখ্যতা জামায়াতের সাথে আওয়ামী লীগের বেশী। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল প্রথম জামায়াত এনেছে। সেটা নিয়ে তারা আন্দোলন করেছে। মতিউর রহমান নিজামী, আলি আহসান মুজাহিদের সঙ্গে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগ নেতারা মিটিং করছে এসব ছবিও আছে। তারা যুগোপথ আন্দোলন করেছে। জাতিকে ব্লাক মেইল করবেন না। গর্ভমেন্টের ফ্যাংশনে ইসলামি ব্যাংক সবচেয়ে বড় ডোনার হয়। টাকা নেওয়ার সময় রাজাকার থাকে না। অন্য সময় রাজাকার বলবেন। এটা ব্লাকমেইল না?

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন তিনি বলেন, জামায়াতের সাথে ‘আন্দোলন, নির্বাচন ও সরকার গঠন’-এই তিন ইস্যুতে জোট হয়েছে একটি বৈধ রাজনৈতিক দলকে বিএনপি সাথে-পাশে রাখলে খারাপ আর আওয়ামী রাখলে ভালো এটা অস্থির মস্তিষ্কের কথা।

সরকার পারলে তাদের নিষিদ্ধ করুক, আমরা তখন তাদের ‘না’ বলে দেব।

লেখকঃ প্রবাসী কলামিস্ট।

Logo-orginal