admin
প্রকাশ: ২০২০-০১-১৬ ১২:৫৪:২৩ || আপডেট: ২০২০-০১-১৬ ১২:৫৪:২৩
ফেইচবুক থেকেঃ বাবা,আমাকে একটু সাহায্য করবে?
পেছন থেকে এমন ডাক শুনে ঘুরে তাকালাম।একজন বয়স্কা মহিলা।চোখে চশমা।গায়ে কালো চাদর।হাতে একটি ব্যাগ।আভিজাত্য স্পস্ট।
রাত ১১টা বাজে।অফিস থেকে বেরিয়ে বাসস্ট্যান্ডে দাড়িয়ে আছি।রাস্তা ঘাট প্রায় ফাঁকা।বাসের অপেক্ষা করছি।
বৃদ্ধার দিকে তাকিয়ে বললাম,জ্বী বলুন।
-আমার ব্যাগটা একটু বাসে তুলে দিতে হবে।
আচ্ছা। তুলে দেবো।
-তুমি কোথায় যাবে?
ইস্কাটন।
-ওহ।
আপনি?
-আমি যাবো নারায়নগন্জে।
(বৃদ্ধার সাথে টুকটাক কথা হচ্ছে।থাকেন উত্তরা। উনার দুই ছেলে, এক মেয়ে।স্বামী নেই।বছর পাচেক আগে মারা গেছেন। বড় ছেলে বড় ব্যবসায়ী। ছোট ছেলে থাকে অস্ট্রেলিয়ায়। মেয়ে জামাইয়ের সাথে নিউজিল্যান্ড। তিনি এখন নারায়নগন্জে যাবেন।সেখানে দূর সম্পর্কের এক বিধবা ভাবী আছেন।
এত রাতে একজন বয়স্কা মহিলা একা একা কিভাবে যাবেন।সাংবাদিকের মন,খটকা লাগছে।
একথা সেকথার পর কেঁদে ফেললেন ভদ্র মহিলা।
যা বললেন,তা শুনে আমি হতভম্ব।
স্বামী মারা যাওয়ার পর ছেলেমেয়েরা তার কোন খোঁজ নেয়না। তিনি ছেলেমেয়েদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেছেন।কিন্তু তাদের সময় নেই।তাই জীবনের শেষ সময়টুকুতাঁর সমবয়সী কিছু মানুষের সাথে কাটাতে চান।সেজন্যই বিধবা ভাবীর কাছে যাচ্ছেন।পরে কোন বৃদ্ধাশ্রমে ঠিকানা খুঁজে নেবেন।
ভদ্রমহিলার কথা শুনছি।আমার চোখ ভিজে যাচ্ছে। উনার চোখে অশ্রুকণা লাইটের আলোতে চিক চিক করছে।
বাস চলে এসেছে।আমি তাঁকে গাড়ীতে তুলে দিলাম।
নিজের মাকে দেখতে ইচ্ছা করছে।আমেরিকা প্রবাসী মায়ের সাথে কথা হয়না কতক্ষণ হবে?
মনে মনে হিসাব করছি।কাল রাত ২টায় কথা বলেছি।২১ ঘন্টা।মোবাইলের বাটন টিপছি….( কপি পোস্ট)